জাবি কলেজ ছাত্র রিদয় কে বন্ধুর বাসায় ডেকে নিয়ে হত্যা,মুক্তিপন দাবী-আটক চার খুনী
রাকিবুল ইসলাম সোহাগ -সাভারের আশুলিয়ায় টাকার লোভে ফারাবি আহমেদ হৃদয় (২১) নামের বন্ধুকে হত্যার পর মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় তারই চার বন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৪। এঘটনায় অপহরণের দশ দিন পর নিহতের মরদেহ একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।।
বৃহস্পতিবার (১৮ মে) বিকেল ৪ টার দিকে আশুলিয়ার মোজারমিলের শিববাড়ি এলাকার ইস্টার্ন হাউজিং এর একটি পুকুর থেকে নিহতের ভাসমান বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে আশুলিয়ার জামগড়া, টাঙ্গাইল ও রাজধানীর পল্লবী এলাকা থেকে তাদের ও জয়পুরহাট র্যাব-5 নওগা থেকে একজন আটক করা হয়।
নিহত মো. হৃদয় আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার ফজলুল হক মিয়ার ছেলে। সে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। গত ৮ মে জামগড়ার বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মানিকগঞ্জের সদর থানার পশ্চিম দাস পাড়া গ্রামের বাবুল হোসেনর ছেলে ময়েজ হোসেন পরান (২২)। তিনি আশুলিয়ার জামগড়া রুপায়নের শফিকের বাড়িতে ভাড়া থেকে স্থানীয় ফার্ণিচারের দোকানে কাজ করতেন। গতকাল বুধবার রাত ১০ টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৪ ও পুলিশ। অপরজন হলেন বগুড়া জেলার সোনাতলা থানার মহেশপাড়া গ্রামের মো. তাহেলুল ইসলাসের ছেলে সুমন মিয়া বাপ্পী (২৫)। তিনি আশুলিয়া শ্রীপুরে দারোগ আলীর বাড়িতে ভাড়া থেকে নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে কাজ করতেন। তাকে বৃহস্পতিবার সকালে টাঙ্গাইলের সখীপুর থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৪। এছাড়াও বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিরপুর থেকে আকাশ নামে আরো একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি পেশায় পোশাক শ্রমিক। তবে তার বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি এবং এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অপর আসামি শাহিন (২৫) কে র্যাব -৫ জয়পুরহাট ক্যাম্প তাকে গ্রেফতার করে।এ ঘটনায় চারজন সরাসরি হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত বলে স্বীকার করেছেন।
র্যাব-৪ জানায়, গত ৮ মে সকাল ১০ টার দিকে পরাণ বন্ধু ফারাবী আহমেদ হৃদয়কে তার ভাড়া বাসায় ডেকে নিয়ে যায়। পরে জিম্মী করে পরিবারের কাছে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। তবে সেদিন দুপুর তাকে হত্যা করে লাশ প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে রাখে। পরে বিকাল ৪ টার দিকে শ্রীপুরের একটি পুকুরে বস্তাবন্দি করে লাশ ফেলে দেয়। দুই দিন পর আসামিরা আবার ওই পুকুরে লাশ ভেসে উঠেছে কিনা দেখতে যায়। তারা লাশ ভেসে উঠা দেখতে পেয়ে আবার লাশ উপরে তুলে ৮/১০ টি ইট বস্তার ভেতরে ভরে পুকুরে ডুবিয়ে দেয়।
র্যাব -৪ এর সিইও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোহাম্মদ আব্দুর রহমান বলেন, আসামিরা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল ছিল। পক্ষান্তরে ভিকটিমের পরিবার সমৃদ্ধশালী ছিল। তারা ভিকটিমের ধনসম্পদ দেখে লোভে পরে যায় এবং পরিকল্পনা করে যে হৃদয়কে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৮ মে দুপুরের সময় হৃদয়কে তার বন্ধু পরান বাসায় ডেকে নিয়ে জিম্মি করে হাতের আংটি নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে হত্যা করে,হত্যার তিনদিন পর আবারো ৫০ লাখ টাকা দাবি করে রিদয়ের মায়ের ফোনে কল করে অপরাধীরা রিদয়ের ব্যবহারিত নাম্বার দিয়ে।অপরাধীরা মৃত্যু নিশ্চিত হতে বালিশ চাপা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ ধরে রাখে আসামিরা। ঐদিন বিকেল ৪ টার দিকে অপরাধিরা বস্তাবন্দি লাশ নিয়ে আশুলিয়া মোজার মিল এলাকায় ইস্টার্ন হাউজিংএর ওই পুকুরে ফেলে দেয়।এসময় তিনি বলেন এখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে বন্ধু নির্বাচনে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে।
জাবি স্কুল এন্ড কলেজ ছাত্র নিহতের সহপাঠী ও শিক্ষক বৃন্দরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে বলেন দ্রুত গ্রেফতার কৃতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ফাঁসী নিশ্চিত করতে হবে এ ঘটনায় অন্য কেউ আরো জাড়িত আছে কিনা অধিকরতর তদন্তের দাবি জানিয়েছেন উপস্থিত সকলে।।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন