নিজ বাড়িতে ছদ্মবেশে ঈদ করতে এসে র‍্যাবের হাতে আটক হলেন ১ যুগ ধরে পালিয়ে থাকা অপহরন ও মুক্তিপন মামলার আসামি

 


শেরপুরের নকলার চাঞ্চল্যকর শিশু আকলিমা খাতুন (০৪) অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির মামলায় আসামি হয়ে এক যুগ ধরে আত্মগোপনে ছিলেন। এর মধ্যে ওই মামলার রায় হয়েছে যেখানে অপহরণের দায়ে তাকে ১৪ বছর এবং মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। কিন্তু এক যুগ ধরে পলাতক থেকেও শেষ রক্ষা হলো না। ঈদে বাড়ি এসে র‌্যাবের জালে আটক হলেন ছদ্মবেশী সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. হোসেন আলী।


শেরপুরে নকলার চার বছর বয়সী এক শিশু অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির মামলায় ২০১১ সাল থেকে পলাতক ছিলেন নকলা উপজেলার পাঁচকাহনীয়া গ্রামের মো. আজম আলীর ছেলে এই হোসেন আলী (৪২)।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-১৪ সিপিসি-১ জামালপুর ক্যাম্পের একটি অভিযানিক দল রবিবার (২৩ এপ্রিল) ভোর ৪টার দিকে নকলার চকপাড়া এলাকার এক আত্মীয়ের বাড়ি হতে ছদ্মবেশে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে আদালতে সোপর্দ করার জন্য নকলা থানায় হস্তান্তর করা হয়।

র‌্যাব জানায়, শেরপুরের নকলা উপজেলার শালখা গ্রামের লেসু মিয়ার ছেলে মো. আব্দুল জলিলের সাথে আসামি মো. হোসেন আলীর আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। সেই সুবাদে আসামি হোসেন আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী মোছা. তাসলিমা খাতুনের বাদী জসিমের বাড়িতে যাতায়াত ছিল। কিন্তু ২০১১ সালের ১০ অক্টোবর আব্দুল জলিলের চার বছর বয়সী শিশুকন্যা আকলিমা খাতুনকে ফুসলিয়ে কৌশলে বাড়ি থেকে নিয়ে যান হোসেন আলীর স্ত্রী তাসলিমা। তারা সুপরিকল্পিতভাবে মেয়েটিকে অপহরণ করে ঢাকায় নিয়ে যান। পরে তার বাবা হোসেন আলীর সাথে যোগাযোগ করে মেয়েকে ফেরত নিতে চাইলে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। ভিকটিমকে নিতে টাকাসহ কাঁচপুর ব্রিজের নিচে যেতে বলা হয়, অন্যথায় ভিকটিমকে বিদেশে পাচার করার হুমকি দেন তারা।

পরবর্তিতে ভিকটিমের বাবা আব্দুল জলিল বাদী হয়ে নকলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. হোসেন আলীকে অভিযুক্ত করে ২০০০ সালের নারী ও শিশু দমন আইনের ৭ ও ৮ ধারায় (অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ) আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। শেরপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের তৎকালীন বিচারক মো. আখতারুজ্জামান ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর এক রায়ে আসামি মো. হোসেন আলীর বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের পৃথক দুটি ধারায় অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হয়। এতে ওই আইনের ৭ ধারায় ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। একইসাথে ৮ ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন।

মামলার পর থেকেই আসামি মো. হোসেন আলী পলাতক ছিলেন। গত ১২ বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তিনি গাজীপুর জেলার সালনা এলাকায় গার্মেন্টে এবং সিএনজিচালক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। এবার ঈদ উদযাপনের জন্য ছদ্মবেশ ধারণ করে নিজ এলাকা নকলায় অবস্থানকালে র‌্যাবের হাতে আটক হন।।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আশুলিয়ার চেতনা মাল্টিপারপাসের ১০ ভয়ংকর প্রতারককে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৪

কক্সবাজারের ঝিলংজা থেকে দশহাজার পিস ইয়াবা সহ মাদক কারবারি কে আটক করেছে র‍্যাব-১৫

কেরানীগঞ্জ থেকে পুলিশের এএসপি পরিচয়দানকারি প্রতারককে আটক করেছে র‍্যাব-১০