শ্রীপুর থানার চাঞ্চল্যকর দুলাল হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করল পিবিআই গাজীপুর


গাজীপুর প্রতিনিধি- শ্রীপুর থানার চাঞ্চল্যকর দুলাল হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করল পিবিআই গাজীপুর গ্রেফতার আসামি


প্রায় আড়াই বছর পর গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন নোয়াগাঁও গ্রামস্থ বহুল আলোচিত চাঞ্চল্যকর বাংলাদেশ নেসলে কোম্পানীর কর্মচারী দুলাল হোসেন হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও আসামী গ্রেফতার করল পিবিআই গাজীপুর। 


পিবিআই গাজীপুরের একটি টিম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অভিযান পরিচালনা করে মামলার ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামী ১। হাসান ইবনে মারুফ আনসারী(২৪),পিতা-মৃত জালাল উদ্দিন আনসারী,মাতা-মৃত উম্মে হানি,সাং- নোয়াগাঁও,থানা- শ্রীপুর,জেলা-গাজীপুরকে ইং-১৬/১১/২০২২ তারিখ রাত্র ০২.৫০ ঘটিকার সময় গাজীপুর জেলা শ্রীপুর থানাধীন নোয়াগাঁও এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। 


অত্র মামলার ভিকটিম দুলাল হেসেন(৩৫), পিতা-আমির হোসেন, সাং-নোয়াগঁাও, ইউপি- রাজাবাড়ী, ওয়ার্ড নং-০৭, থানা-শ্রীপুর, জেলা-গাজীপুর নেসলে বাংলাদেশ এর নুডুলস্ বিভাগে চাকুরী করত। প্রতিদিনের ন্যায় গত ইং ২৬/০২/২০২০ তারিখ রাত অনুমান ১০.০০ টার সময় কাজ শেষ করে বাড়ী ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। দুলাল হোসেন এর বাড়ীর পশ্চিম পাশে ১০০ গজ দূরে  অজ্ঞাতনামা আসামীরা ভিকটিমের মাথায় আঘাত করলে সে মাটিতে পড়ে থাকে। তার প্রতিবেশী মাসুম মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে তার বাড়ীতে সংবাদ দিলে ডিসিস্ট দুলাল হোসেনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়। ডিসিস্ট দুলাল হোসেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। 


এ সংক্রান্তে দুলাল হোসেন এর বড় ভাই মোঃ বিল্লাল হোসেন বাদী হয়ে এজাহার দায়ের করলে মামলা রুজু হয়। 

 

   শ্রীপুর থানা পুলিশ হত্যা মামলাটি  তদন্ত করেন। রহস্য উদঘাটন না হওয়ায় মামলাটি তদন্তাধীন অবস্থায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ঢাকা মামলাটি পিবিআই কে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন।


অ্যাডিশনাল আইজিপি পিবিআই জনাব বনজ কুমার মজুমদার. বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই গাজীপুর ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার, জনাব মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এর সার্বিক সহযোগীতায় মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) জনাব মোঃ জামাল উদ্দিন মামলাটি তদন্ত করেন।


গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ভিকটিম দুলাল হোসেন নেসলে বাংলাদেশ লিমিটেড এ গাজীপুর শাখায় নুডুলস্ বিভাগে চাকুরী করত। ভিকটিম দুলাল হোসেন প্রতিদিনের ন্যায় অর্থাৎ গত ২৬/০২/২০২০ তারিখ রাত অনুমান ১০.০০ ঘটিকার সময় কর্মস্থল থেকে বাড়ী ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে রাজেন্দ্রপুর পেপসি গেইট এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করে। অত্র মামলার গ্রেফতারকৃত আসামী হাসান ইবনে মারুফ আনসারী এবং তার সহযোগী আসামীগন পূর্ব পরিকল্পনা আনুযায়ী  ভিকটিম দুলাল হোসেনকে দূর থেকে অনুসরন করতে থাকে। ভিকটিম রাজেন্দ্রপুর বাজার আসার পর একই অফিসে কর্মরত শামীম এর মোটর সাইকেলে করে বাসার কাছাকাছি  মেইন রোডে ভিকটিম দুলাল হোসেনকে নামিয়ে দেওয়ার পর ভিকটিমের বাড়ীর সরু রাস্তা দিয়ে একাকী বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পর পূর্বহতে ওৎ পেতে থাকা আসামীগন ভিকটিমের মাথায় বঁাশের লাঠি দিয়ে আঘাত করলে ভিকটিম মাটিতে পড়ে যায়। পরবর্তীতে  গ্রেফতারকৃত আসামী হাসান ইবনে মারুফ আনসারী এবং তার সহযোগী আসামীগন ভিকটিমের নিকট থাকা মানিব্যাগ নিয়ে মানিব্যাগে থাকা টাকা ভাগাভাগি করে নিয়ে যায়। এরপর ভিকটিমের প্রতিবেশী মাসুম মাস্টার ঘটনাস্থল দিয়ে বাসায় যাওয়ার সময় ভিকটিম দুলাল হোসেনকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তার ছোট ভাই অর্থাৎ গ্রেফতারকৃত আসামী হাসান ইবনে মারুফ আনসারীকে ফোন করে জানায় যে, দুলাল মামা অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে দ্রুত চলে আস।  তখন গ্রেফতারকৃত আসামী হাসান ইবনে মারুফ আনসারী এবং তার ভাই মাসুম মাস্টার ভিকটিম দুলাল হোসেনকে প্রথমে বাসায় নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে হাসপাতালে ভর্তি করলে কর্তব্যরত ডাক্তার দুলাল হোসেনকে মৃত্যু ঘোষনা করেন।


এ বিষয়ে পিবিআই এর পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামী হাসান ইবনে মারুফ আনসারী ও তার সহযোগী আসামীগন ভিকটিমের প্রতিবেশী এবং তারা মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত। ভিকটিম দুলাল হোসেন আর্থিক ভাবে সাবলম্বী হওয়ার কারণে অনেক দিন থেকে আসামীগন তার কাছ থেকে কিভাবে টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেওয়া যায় সেই বিষয়ে পরিকল্পনা করে এবং সে মতে ঘটনার দিন আসামীগন ভিকটিম দুলাল হোসেন অফিস থেকে আসার বিষয়টি অনুসরন করে এবং ঘটনাস্থলের আশপাশে ওৎ পেতে থাকে। ভিকটিম দুলাল হোসেন ঘটনাস্থলে আসলে বাঁশের লাঠি দিয়ে ভিকটিমের মাথায় আঘাত করলে ভিকটিম মাটিতে পড়ে যায়। এরপর আসামীগন ভিকটিমের কাছে থাকা মানিব্যাগ নিয়ে মানিব্যাগে রক্ষিত টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়।

আসামী হাসান ইবনে মারুফ আনসারীকে গ্রেফতার পূর্বক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ইং ১৬/১১/২০২২ তারিখ বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে উক্ত আসামী নিজেকে ভিকটিম দুলাল হোসেন হত্যা কান্ডের সাথে জড়িয়ে এবং ঘটনার সাথে জড়িত অপর আসামীদের নাম উল্লেখ করে এই হত্যাকান্ডের বিষয়ে পরিকল্পনা এবং অন্যান্য আসামীদের কার কি ভূমিকা ছিল সেই বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করে বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

বিঃদ্রঃ পিবিআই নিউজ

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আশুলিয়ার চেতনা মাল্টিপারপাসের ১০ ভয়ংকর প্রতারককে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৪

কক্সবাজারের ঝিলংজা থেকে দশহাজার পিস ইয়াবা সহ মাদক কারবারি কে আটক করেছে র‍্যাব-১৫

কেরানীগঞ্জ থেকে পুলিশের এএসপি পরিচয়দানকারি প্রতারককে আটক করেছে র‍্যাব-১০