৭ বছর ধরে পালিয়ে থাকা হত্যা মামলার আসামি কে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৪(সিপিসি-৩)মানিকগঞ্জ শাখা

রাকিবুল ইসলাম সোহাগ :- রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ ঘাট এলাকা হতে দীর্ঘ ০৭ বছর বিভিন্ন ছদ্মবেশে পলাতক থাকা সালেহা বেগম হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী মোঃ রেজাউল মন্ডলকে গ্রেফতার করেছে সিপিসি-৩, র‍্যাব-৪ মানিকগঞ্জ।


গত ইংরেজি ০২/১০/২০১১ তারিখে এজাহার নামীয় একমাত্র  আসামী মোঃ রেজাউল মন্ডল(৩৭) মামলার বাদী মোঃ ইসমাইল হোসেনের বড় বোন  ভিকটিম সালেহা বেগমকে হত্যা করে। যার প্রেক্ষিতে মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় থানায় মামলা নং ০১(১০)১১ তারিখ ০২/১০/২০১১ একটি হত্যা  মামলা রুজু হয়। মামলা হওয়ার পর এজাহারনামীয়  আসামি মোঃ রেজাউল মন্ডল (৩৭) ধরা পড়ে এবং ০৪ বছর হাজত খেটে ২০১৫ সালে জামিনে বের হয়ে পরে আত্নগোপনে চলে যায়। পরে আদালত উক্ত মামলার বিচারকার্য শেষে  আসামী মোঃ রেজাউল মন্ডলকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড  প্রদান করেন। আসামীর বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক দায়েরকৃত যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পরোয়ানা রুজু হবার পর হতে ধৃত আসামী মোঃ রেজাউল মন্ডল নিজেকে আত্মগোপন করার জন্য ছদ্মবেশ ধারণ করে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াতো। 

এরই ধারাবাহিকতায়, র‌্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অদ্য ১০ জুন ২০২২ তারিখ রাত ০১.৩০ ঘটিকার সময় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মোঃ রেজাউল মন্ডল(৩৭) কে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দঘাট থানাধীন নিহালপুর এলাকা হতে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়। 

 প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ রেজাউল মন্ডল(৩৭) ও সালেহা বেগমের স্বামী সিরাজুল ইসলাম (সের্জাল) উভয়রই পাটুরিয়া ঘাটে চায়ের দোকান ছিল এবং তাদের একে অপরের বাসাও পাশাপাশি ছিলো বিধায় একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে সালেহা বেগমের সাথে আসামি রেজাউলের ঘনিষ্ঠতা প্রেমের সম্পর্কে রুপ নেয়। এমনকি সালেহা বেগমের স্বামীর অনুপস্থিতিতে আসামি রেজাউল তার বাড়িতে আসা যাওয়া শুরু করে। বেশ কিছু দিন অতিবাহিত হওয়ার পরে ঘটনার দিন ০১/১০/২০১১ তারিখ দিবাগত রাতে অনুমান  ১১ঃ৫৫ এর দিকে আসামি রেজাউল সালেহা বেগমের স্বামী সিরাজুল এর অনুপস্থিতিতে তার বসত ঘরে প্রবেশ করলে সালেহা বেগম রেজাউলকে বিয়ের জন্য চাপাচাপি শুরু করায় তাদের মধ্যে বাক বিতন্ডা শুরু হয়। বাক বিতন্ডার এক পর্যায়ে রেজাউল, সালেহা বেগমের পরনের কাপড়ের আচল দিয়ে   সালেহা বেগমের গলা পেচিয়ে ধরলে শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে মুহুর্তেই সালেহা বেগম মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে এবং আসামি রেজাউল পালিয়ে যায়। অতঃপর রেজাউলকে একমাত্র আসামি করে সালেহা বেগমের ছোট ভাই ইসমাইল হোসেন বাদি হয়ে মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় থানার মামলা নং ০১(১০)১১ তারিখ ০২/১০/২০১১ একটি হত্যা  মামলা রুজু করলে পরের দিনই আসামি রেজাউল থানা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। পরবর্তীতে ০৪ বছর জেলে থাকার পর ২০১৫ সালে মামলার চুড়ান্ত রায়ের পূর্বেই আসমি রেজাউল জামিনে বের হয়ে তার শাস্তি নিশ্চিত জেনে আত্নগোপনে চলে যায়। গত ০৭ বছর ধরে আসামি রেজাউল বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ করে প্রথমে দৌলতদিয়া ও পরে ঢাকা জেলার সাভার, আশুলিয়া ও নবীনগর  এলাকায় আত্মগোপনে থাকার পর গতকাল রাতে আসামি রেজাউল রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ ঘাট থানা এলাকার নিহালপুর গ্রামে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে বর্নিত ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামী’কে মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের জোড়ালো অভিযান অব্যাহত থাকবে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কক্সবাজারের ঝিলংজা থেকে দশহাজার পিস ইয়াবা সহ মাদক কারবারি কে আটক করেছে র‍্যাব-১৫

৭ই মার্চ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন আশুলিয়া থানা ছাত্রলীগ

নীলফামারীতে ট্রেনে কেটে ৪ মৃত্যু: দুজনকে চাকরির আশ্বাস মন্ত্রীর।দেশের বার্তা 24