চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত ধর্ষণ ও মানবপাচার মামলার মূল হোতা কে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৯(সিলেট)

সিলেট প্রতিনিধি- চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত ধর্ষণ ও মানবপাচার মামলার মূল হোতা সোহেল মিয়া (২৭) কে মৌলভীবাজার জেলার সদর থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে শায়েস্তাগঞ্জ ক্যাম্প (র‌্যাব-৯, সিলেট)



র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ান, র‌্যাব এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের নৃশংস ও ঘৃণ্যতম অপরাধ বিশেষ করে ধর্ষণ, মানবপাচার, হত্যা মামলা,  সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, জঙ্গি দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, মাদক ও ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেপ্তারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। নরহত্যাসহ  যেকোন ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে র‌্যাবের প্রতিটি সদস্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে জনসাধারণের জন্য একটি নিরাপদ বাসযোগ্য সমাজ তথা দেশ বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।


সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও টিকটকের মাধ্যমে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার বেতাপুর গ্রামের কিবরিয়া মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়ার (২৭) সঙ্গে তিন বছর আগে পরিচয় হয় পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলার ডেমরা গ্রামের রুকশিপাড়া এলাকার এক তুরুণী (২২)। পরিচয়ের সুবাদে ভালোবাসার গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমিক যুবক ভালোবাসার দুর্বলতার সুযোগে সাতক্ষীরা জেলার সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পাশ্ববর্তী দেশের একটি শহরে নিয়ে যায় তরুণীকে। এ সময় তাঁকে (তরুণীকে) আটকে রেখে দেহ ব্যবসা করতে বাধ্য করে যুবক। পরে বিয়ে করে তাঁরা। এরপর আবারও সোহেলের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় গত ১২ মে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়ন দিয়ে পাশ্ববর্তী দেশে পাচার করা হয় ওই তরুণীকে।


এরই ধারাবাহিকতায় প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৯, সিলেট এর একটি আভিযানিক দল উক্ত মামলার এজাহারনামীয় ১ নং আসামী সোহেল মিয়া (২৭), পিতা- কিবরিয়া আহমদ, মাতা- মোছা ডলি বেগম, সাং- বেতাপুর, থানা- নবীগঞ্জ, জেলা- হবিগঞ্জ অদ্য ২৪/০৫/২০২২খ্রি. তারিখ সময় ১০.০০ ঘটিকায় মৌলভীবাজার জেলার সদর থানা এলাকা থেকে অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করে।


ঘটনার বিবরণ ও আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গত প্রায় ০৩ বছর পূর্বে ফেসবুকের মাধ্যমে তরুনীর সাথে পরিচয় ও সর্ম্পক হয়। সম্পর্কের জেরে যুবক সাতক্ষীরা জেলায় সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে গত ২০২১ সালের মার্চ মাসের দিকে পাশ্ববর্তী একটি শহরে নিয়ে যায় এবং সেখানে আটকে রেখে ইচ্ছার বিরুদ্ধে দেহ ব্যবসা করায়। তরুণী অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়েই চলতি বছর ২০২২ সালের জানুয়ারী মাসের দিকে দেশে ফিরে আসে। এর কিছু দিন পর যুবক ও দেশে ফিরে এসে তরুণীকে মিথ্যা আশ্বাস ও প্রলোভন দেখায়। তরুণী যুবকের প্রলোভনে পড়ে এবং যুবকের অন্যান্য সহযোগীদের সহযোগীতায় তিনবিঘা করিডোর দিয়ে তরুনীকে দহগ্রামে নিয়ে যায়, এরপর যুবক এবং তার অন্যান্য সহযোগী তরুনীকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে মানবপাচারকারীর মূল হোতা যুবক ও তার সহযোগী তরুণীকে পাশ্ববর্তী দেশে পাচার করে দেয়। ১৫-০৫-২০২২ খ্রি. তারিখ পাশ্ববর্তী দেশের একটি শহর থেকে কৌশলে বাংলাদেশে ফিরে আসে ওই তরুণী। এ ঘটনায় তিনি সোহেলকে প্রধান আসামিসহ ও মোট পাঁচজনকে আসামি করে লালমনিরহাট জেলা পাটগ্রাম থানার মামলা নং- ১১, তারিখ- ২১/০৫/২০২২ ইং, ধারাঃ-৯(১)/৩০, ২০০০ নারী ও শিশু নিযার্তন দমন আইন (সংশোধনী/২০০৩) তৎসহ ২০১২ সালের মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের ৬(২)/৭/১০/১১ ধারায় গত ২১ মে রাতে মামলা করেন তরুণী। 


প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত প্রধান আসামী নিজের কৃতকর্মের বিষয়টি স্বীকার করে। ঘটনায় অন্যান্য পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র‌্যাব-৯ এর চলমান গোয়েন্দা তৎপরতা ও অভিযান অব্যাহত থাকবে।


পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ সহ মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে গ্রেফতারকৃত আসামীকে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আশুলিয়ার চেতনা মাল্টিপারপাসের ১০ ভয়ংকর প্রতারককে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৪

কক্সবাজারের ঝিলংজা থেকে দশহাজার পিস ইয়াবা সহ মাদক কারবারি কে আটক করেছে র‍্যাব-১৫

কেরানীগঞ্জ থেকে পুলিশের এএসপি পরিচয়দানকারি প্রতারককে আটক করেছে র‍্যাব-১০