সাভারের সাকিব হত্যা মামলার মূল আসামী কে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৪


রাকিবুল ইসলাম সোহাগঃ- সাভারের চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস সাকিব হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনপূর্বক মূল পরিকল্পনাকারী এবং প্রধান আসামি ইমন’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪।


 র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র‌্যাব এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে র‌্যাবের জোড়ালো তৎপরতা অব্যাহত আছে। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি ক্লুলেস হত্যা কান্ডের রহস্য উন্মোচনপূর্বক হত্যাকারীদেরকে গ্রেফতার করে দেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছে সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

গত ২০ মার্চ ২০২২ ইং তারিখে মোঃ রাকিব মিয়া র‌্যাব-৪ এর নিকট একটি অভিযোগ দায়ের করেন যে তার ছোট ভাই সাকিব গত ১৭/০৩/২০২২ তারিখ রাত ২১.৩০ ঘটিকা থেকে নিখোঁজ যার প্রেক্ষিতে র‌্যাব-৪ সাকিব উদ্ধারে পুলিশের পাশাপাশি ছায়াতদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে গত ২৬ মার্চ ২০২২ তারিখ সন্ধ্যা ৭টার দিকে সাভারের বনগাঁও ইউনিয়নের একটি নির্মাণাধীন একতলা ভবনের সেপটিক ট্যাংক থেকে সাকিবের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত সাকিব বনগাঁওয়ের পশ্চিম কোটাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। সে আমিনবাজারের একটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলো এবং লেখাপড়ার পাশাপাশি একটি চাকরিও করতো। নিহত সাকিবের ভাই বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় এসংক্রান্তে একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে ঘটনাটি প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়াসহ এলাকায় ব্যপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় যার ফলশ্রæতিতে র‌্যাব-৪ এর একটি গোয়েন্দা দল পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে।

নিখোজ হওয়ার পর থেকেই ভুক্তভোগীর মোবাইল ফোনটি বন্ধ ছিলো যার পরবর্তীতে মোবাইলটি গাবতলী থেকে এক ব্যক্তির নিকট হতে উদ্ধার করা হয়। উক্ত ব্যক্তির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এবং ভুক্তভোগীর পরিবারের সন্দেহের ভিত্তিতে র‌্যাব-৪ এর একটি গোয়েন্দা দল সাকিবের কয়েকজন বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে উক্ত হত্যার সাথে জড়িত আসামীদের সম্পর্কে  ধারণা পাওয়া যায়। এরই ধারাবাহিকতায় ২৭ মার্চ ২০২২ তারিখ ১৪.০০ ঘটিকার সময় র‌্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত সাকিব হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনপূর্বক নিম্নোক্ত হত্যাকারী’কে সাভার মডেল থানাধীন নগরকোন্ডা এলাকা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়ঃ

মোঃ ইমন দেওয়ান (১৮), জেলা- ঢাকা।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী উক্ত হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। সে জানায়, তারা তিনজন বন্ধু মিলে গত ১৭ মার্চ ২০২২ তারিখ রাত আনুমানিক ১০.০০ ঘটিকার সময় ভিকটিম’কে ছুরি দিয়ে উপুর্যপুরি কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যার কারণ অনুসন্ধানে জানা যায় যে, আসামি মোঃ ইমন ও পলাতক আসামী মোঃ পিয়াসের কাছে ৬০০০ টাকা পাওনা ছিল ভুক্তভোগী সাকিবের। ভুক্তভোগী বেশ কিছুদিন যাবৎ আসামীদেরকে তার পাওনা টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছিলো। কিন্তু আসামীরা ভুক্তভোগীকে টাকা ফেরত না দিয়ে তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক গত ১৭/০৩/২০২২ তারিখ আনুমানিক ২১.০০ ঘটিকার সময় আসামি মোঃ ইমন ফোন কলের মাধ্যমে ভিকটিমকে তার পাওনা টাকা প্রদানের কথা বলে সাভার মডেল থানাধীনন নগরকোন্ডা এলাকায় নিয়ে আসে। অতপর সাকিবকে নির্জন একটি নির্মাণাধীন একতলা বিল্ডিং এর কাছে নিয়ে দুইটি ধারালো ছুরি দিয়ে উপুর্যপূরী আঘাত করে হত্যা করে। পরবর্তীতে তারা লাশ গুমের উদ্দেশ্যে মৃতদেহটি উক্ত নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে ফেলে ঢাকনা বন্ধ করে দেয়। জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় গ্রেফতারকৃত ও পলাতক আসামী মাদক সেবী। যেহেতু ভুক্তভোগী চাকুরী করতো এবং তার কাছে প্রায়শই টাকা থাকতো তাই আসামীরা বিভিন্ন সময়ে তার কাছে মাদক কেনার জন্য জোরপূর্বক টাকা নিতো। এ নিয়ে পূর্বেও তাদের মাঝে ঝামেলা ছিল। 


গ্রেফতারকৃত আসামী’কে প্রয়োজনীয় আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য সাভার মডেল থানায় হন্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। এছাড়াও উক্ত হত্যা কান্ডের সাথে জড়িত পলাতক আসামীদের গ্রেফতাররের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এই ধরনের নৃশংস অপরাধীদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের জোড়ালো অভিযান অব্যাহত থাকবে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আশুলিয়ার চেতনা মাল্টিপারপাসের ১০ ভয়ংকর প্রতারককে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৪

কক্সবাজারের ঝিলংজা থেকে দশহাজার পিস ইয়াবা সহ মাদক কারবারি কে আটক করেছে র‍্যাব-১৫

কেরানীগঞ্জ থেকে পুলিশের এএসপি পরিচয়দানকারি প্রতারককে আটক করেছে র‍্যাব-১০