সৈয়দপুরে চলন্ত ট্রেনে ছোরা পাথরের আঘাতে অবশেষে নষ্ট হয়ে গেল শিশু আজমিরের ডান চোখ
আবেদীন হক -নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ
পাঁচ বছরের শিশু আজমিরের চোখে এখন কালো চশমা। ফুটফুটে মেধাবী এই শিশুটির একটি চোখ অকালেই অন্ধ হয়ে যাবে আসলে তা কেউ মেনে নিতে পারছেনা। এই ঘটনার পর শিশু আজমিরের কর্নিয়া অপারেশন করা হয়েছিল রাজধানীর ফার্মগেটের ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে। বাবা মায়ের আশা ছিল ছেলেটি ডান চোখের দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবে। কিন্তু ফলোআপ চিকিৎসা করাতে গিয়ে চিকিৎসকরা জানিয়ে দিল ডান চোখে নাকি কিছুই দেখতে পারবেনা আজমির। নীলফামারীর ডোমার উপজেলার আমবাড়ি গ্রামের নিজস্ব মাছের হ্যাচারি ব্যবসায়ী মারুফ ইসলামের ছোট ছেলে আজমির। বুকফাটা কান্না বাবা ও মায়ের। আর শিশু আজমির এখনও বুঝতে পারেনি সে ডান চোখ দিয়ে আর কোনদিন কিছু দেখতে পাবেনা। এখন তার বাম চোখটিই একমাত্র ভরসা। পাঁচ বছর বয়সী আজমিরের বাবা মারুফ ইসলাম রবিবার জানালেন। জানার পর শিশুটির মর্মান্তিক বাস্তবতার কথা চিন্তা করে সকলেরেই চোখে কান্না আসে।
১৫ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় খুলনাগামী সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনে ডোমার থেকে সৈয়দপুর ফিরছিলেন। স্টেশনে পৌঁছাতে আর মাত্র কয়েক মিনিট বাকি ছিল। স্টেশনের কাছেই পুরাতন মুন্সীপাড়ায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। ট্রেনে জানালার পাশে বসে ছিল আজমির। সৈয়দপুর রেলস্টেশনের হোম সিগন্যালের কাছে হঠাৎ বাইরে থেকে আসা পাথর তার ডান চোখে আঘাত করে। ছেলের চোখ ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে। এ অবস্থায় সৈয়দপুর স্টেশনে নেমে রেলওয়ে পুলিশের এ এসআই প্রভাষ কুমারের সহায়তায় দ্রুত সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যাই। হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ রবিউল ইসলাম দ্রুত শিশুটিকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। ওই হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাঃ রাশেদুল ইসলাম মাওলার শরণাপন্ন হলে তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠিয়ে দেন। পরের দিন ১৬ আগস্ট রাজধানীর ফার্মগেটের ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে ছেলেকে নিয়ে যাই। সেখানে ১৭ আগস্ট আজমিরের চোখের (কর্নিয়া) অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। এরপরেও ছেলের দৃষ্টিশক্তি আস্তে আস্তে কমতে থাকে। শনিবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে ফলোআপ চিকিৎসা করাতে যাই। সেখানকার চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাঃ কামরুল হাসান সোহেলের তত্ত্বাবধানে পাঁচ থেকে ছয়জন ডাক্তার ছেলের চোখের আলট্রাসনোগ্রামসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করলেন। চোখের সামনে ডাক্তার আঙ্গুল দেখালেন, কয়টা আঙ্গুল কিন্তু ছেলে তা বলতে পারল না। ছবিও দেখতে পেল না।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন