বিশ্বজুড়ে থাকবে মানুষ পৃথিবীটা জনতার




তুফান সাকিবঃ-
আমরা সবাই মানুষ। মানুষ হিসেবে তৈরি করেছেন স্রষ্টা আমাদের সকলকে। অতঃপর, সবাইকে পাঠিয়েছেন এই সুন্দর ভুবনে। যাকে যেখানে খুশি ভূ-প্রকৃতিতে প্রেরণ করেছেন।এছাড়া আমাদের এই পৃথিবী নামক গ্রহটিও তিনি নিজ হাতে খেয়াল-খুশি মতো সাজিয়েছেন।কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু,কোথাও ভঙ্গুর, কোথাও বৃদ্ধিমান, কোথাও জল,কোথাও স্থল,কোথাও পাহাড়, কোথাও সাগর।এছাড়াও প্রয়োজন অনুযায়ী আর নানা ধরনের গ্রহ, উপগ্রহ এবং বিভিন্ন জাতের বৃক্ষরাজি ও প্রাণী সৃষ্টি করেছেন তিনি আপন সত্তায়। অনেক সুন্দর ভাবে পরিচালিত হচ্ছে পুরো জগৎ। কারো কোনো অভিযোগ নেই। নেই কোনো অপূর্ণতা।অপূর্ণতা এজন্যই নেই যে,প্রত্যেকের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো ধারাবাহিকতা বজায় রেখে প্রস্তুত আছে। যার যেটা দরকার হয় আপনার থেকেই প্রকৃতি থেকে সবকিছু আহরণ করে সুন্দরভাবে চলছে জীবের শ্রেণীবিন্যাস।শ্রেণীবিন্যাস এতটাই সুক্ষ্ম যে,কোথাও কোনো শ্রেণীবৈষম্যের অবকাশমাত্রও নেই। এজন্যই নেই যে, সবকিছুর মালিক তো স্রস্টা নিজেই।

তাহলে প্রশ্ন এখানেই যে,এমন সুন্দরের এই ভুবনে বিভেদ বা বৈষম্যের সৃষ্টি করলো কে?
যদি এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে যান তাহলে এটা স্পষ্টতর হয়ে ওঠে যে,বিভেদ বা বৈষম্যের উদ্ভাবক হলো মানুষ। 

হ্যাঁ।এই উত্তরের স্বপক্ষে কিছু যুক্তি যদি না তোলা যায় তাহলে পুরো আলোচনাটি ভণ্ডুল হয়ে যাবে। 
জগৎ স্রষ্টা হলেন প্রভু আর বিভেদ বা বৈষম্যের স্রষ্টা হলো মানুষ। কারণ, আমরা মানুষ হয়ে মানুষের ওপর অবিচার করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি অতি সহজেই।
এর প্রধান কারণ মূলত দুইটি।
 ১. এর পেছনে একটি সবচেয়ে বড় স্বার্থবাদী ইস্যু হচ্ছে ক্ষমতার মোহ।
২.এর পেছনে অন্য আরেকটি ইস্যু হলো অর্থের প্রতি অন্ধ আসক্তি। 

এছাড়াও আরো অনেকগুলি ইস্যু বিদ্যমান আছে। 
তবে এই দুইটি কারণের জন্য পুরো জগৎ জুড়ে আজ অশান্তি বিরাজ করছে। কেউ মরিয়া হয়ে উঠেছে বৈধ-অবৈধ উপায়ে সর্বমূল্যে ক্ষমতায় আসীন হওয়ার জন্য। আর কেউ পাগল সেজেছে কালো টাকার পাহাড় গড়ে তোলার জন্য। তাঁরা মনে করে যে,এই দুইটি সম্পদ আদায় করতে পারলেই তো সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হওয়া সম্ভবপর হবে। 
ফলে যে যেভাবে পারছে অবৈধ উপায়কে গ্রহণ করছে। 
আর এখান থেকেই তো সকল অন্যায়-অসঙ্গতির উদ্ভব হচ্ছে। শ্বাসরোধ হচ্ছে প্রকৃত মানবতা ও অধিকারের।সুবিধাবঞ্চিত মানুষেরা হচ্ছে নিপীড়িত আর হতদরিদ্র মানুষেরা হচ্ছে সর্বহারা।তৈরি হচ্ছে উচ্চবিত্ত ও নিম্নবিত্ত নামের বিশাল শ্রেণীবৈষম্যের।
এভাবে মানবজাতি কোনোদিন সফলতার দ্বারোদঘাটন করতে পারবে না। একচেটিয়াভাবে এক শ্রেণী উঠবে শেকড় থেকে শিখরে আর আরেক শ্রেণী মাটির ভিতরে ধামাচাপা খেতে খেতে অতল গহ্বরে নিমজ্জিত হতে থাকবে। 
এভাবে আর কতদিন? এভাবে কি জাতি প্রগতির আলো উপভোগ করতে পারবে? না।কখনোই পারবে না। 
তাহলে এর থেকে উত্তরণ ঘটানোর জন্য  সাম্যবাদ বা কমিউনিজম একটি যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করে। 
কারণ, সাম্যবাদ বা কমিউনিজম এমন একটি ধারা যেখানে শ্রেণীর নামে অসাম্যনীতির সুযোগ থাকে না। 
মানুষ হিসেবে সকলেরই সমান অগ্রাধিকারকে এখানে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়। জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চারভাবে কাজ করে এটি। তাই আমাদের সকলেরই হৃদয়ে সাম্যবাদী ধারণাটিকে স্থান দেয়া দরকার। কারণ, সাম্যবাদ সম্পূর্ণ স্বাধীন।  আমি এখানে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোন থেকে কোনো কথা বলছি না কিন্তু  সাম্যবাদ বা কমিউনিজম নামের একটি সু-কল্যাণকর নীতির কথা বলছি।এটি আমার রাজনৈতিক কোনো আলোচনা নয়। সাম্যবাদ হলো পৃথিবীর সব মানুষের একটি অবিচল আস্থার নিশানা।

পরিশেষে,আলোচনার প্রসঙ্গগত একটা দিকের কথা বলছি।  স্রষ্টার জগৎ জুড়ে মানুষ বিচরণ করবে। ভোগ করবে। এটাই স্বাভাবিক।অথচ, পৃথিবীতে কত বাঁধা আর বিপত্তি পদে পদে। দেশে দেশে বর্ডার আর বেরিগেড দিয়ে স্থায়ী হচ্ছে বৈষম্য। মানুষ তো পৃথিবীতে সর্বত্র বিচরণ করবে। এটা মানুষের অধিকার। আর দরিদ্র বলে অবৈধ বিত্তশালীরা তাদের ওপর নির্যাতন করবে। সেটা মুখ বুঝে সহ্য করে যেতে হবে এটা কোন ধরনের শোষণ? প্রত্যেকের স্বাধীনতা লাভের অধিকার আছে। এই স্বাধীনতাকে হরণ করা মানেই তো অবিচার। অবিচারগুলো ঘটে চলার পেছনের কারণগুলো সম্পর্কে পূর্বেই বলা আছে। আর এর থেকে উত্তরণের উপায় সম্পর্কেও বলা হয়েছে নিশ্চয়ই। তাই আসুন আমরা সকলেই সকল প্রকার বিভেদ বা বৈষম্যকে এড়িয়ে মানবতার সুরে সমবেত হয়ে সাম্যবাদকে গ্রহণ করি।সাম্যবাদ মানেই বৈষম্যের দমনের মাধ্যমে শান্তি ও প্রগতি প্রতিষ্ঠার অনন্য নিদর্শনের নাম।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আশুলিয়ার চেতনা মাল্টিপারপাসের ১০ ভয়ংকর প্রতারককে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৪

কক্সবাজারের ঝিলংজা থেকে দশহাজার পিস ইয়াবা সহ মাদক কারবারি কে আটক করেছে র‍্যাব-১৫

কেরানীগঞ্জ থেকে পুলিশের এএসপি পরিচয়দানকারি প্রতারককে আটক করেছে র‍্যাব-১০