নীলফামারীতে মাঠে ভরা সরিষার চাষ
আবেদীন হক নীলফামাড়ী প্রতিনিধিঃ
শিশির ভেজা শীতের সকাল। ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়ানো নীলফামারীর মাঠ জুড়ে কেবল চোখে পড়ছে সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহ। সরিষার সবুজ গাছের হলুদ ফুলগুলো শীতের সোনাঝরা রোদে যেন ঝিকিমিকি করছে। এ যেন এক অপরুপ সৌন্দর্যের দৃশ্য। দেখে যেন মনে হচ্ছে প্রকৃতি কন্যা সেজেছে গায়ে হলুদ বরণ সেজে।
চারপাশে শুধু সরিষা ফুলের মৌ-মৌ গন্ধে মুখরিত ফসলের মাঠগুলো। তাই তো মৌমাছির দল মধু আহরণে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। আর এই হলুদ সরিষা ফুলের মাঝে রঙিন স্বপ্ন দেখছে কৃষকরা। চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলনের হাতছানিতে কৃষকের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে খুশির ঝিলিক। অল্প সেচ, কম পরিচর্যা ও খরচ এবং সরিষা উত্তোলনের পর সেই জমিতে বোরো ধান চাষের সুযোগ থাকায় পরবর্তী ফসল হিসেবে কৃষকদের মধ্যে সরিষা চাষের বিকল্প নেই। এ জন্য প্রতি বছরই বাড়ছে সরিষার চাষ। নীলফামারীর কৃষকরা জানান, আমন ধান কাটার পর ঐ মাঠে সরিষার চাষ করা হয়। আর কম পুঁজিতে সরিষা চাষে দ্বিগুণ লাভ হয়। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৬ হাজার টাকা খরচ করে ৭-৮ মণ সরিষা উৎপাদন করা যায়। যার বাজার মূল্য ১২ হাজার টাকার বেশি। সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কৃষকরা তাদের অধিকাংশ জমিতে উচ্চফলনশীল (উফশি) বারি-১৪, বারি-৯, সরিষা-১৫, বিনা সরিষা-৯, বিনা সরিষা-৪ ও স্থানীয় টরি-৭ চাষ করেছে। ফলন ভালো হলে এবং দাম পেলে আগামী বছর সরিষা চাষ আরো বাড়বে। এছাড়া সরিষার জমিতে ধানের চাষও ভালো হয় এবং বোরো চাষে খরচ কম হয়। এ বছর অনুকূল আবহাওয়া থাকায় সরিষা গাছও বেড়ে উঠেছে দ্রুত। যার কারণে কৃষকের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নীলফামারীর উপ-পরিচালক মো. আবু বকর সিদ্দিক জানিয়েছেন, নীলফামারী জেলায় এ বছর সরিষা চাষের লক্ষমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু লক্ষমাত্রার তুলনায় বেশি অর্জিত হয়েছে। চলতি মৌসুমে ৫ হাজার ৫৫৫ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। কৃষকদের সরিষা চাষাবাদের ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন